রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন

পিছু ছাড়ছে না সিন্ডিকেটের ভূত: বাজারে নেই সু-সংবাদ

মেঘনার আলো ২৪ ডেস্ক / ৩৭১ বার পঠিত
আপডেট : শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৩, ৩:১৬ অপরাহ্ণ

ভোক্তাপর্যায়ে ডিম-আলু-পেঁয়াজ, সয়াবিন ও চিনির দাম সহনীয় রাখতে নির্ধারিত দাম বেঁধে দেয় সরকার। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং ৬৫ টাকা দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের এ নির্দেশনা কেউই মানছে না। উল্টো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে এ পণ্যগুলো।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর বাসাবো, মাদারটেক কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ডিমের দাম রাখা হচ্ছে ১৫ টাকা। ডিমের মান ও সাইজভেদে প্রতি হালি ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এদিকে খুচরাপর্যায়ে ৩৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও তা উপেক্ষা করে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি আলু। পরিশোধিত খোলা চিনি কেজিপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রির কথা থাকলেও কেজিপ্রতি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

বাজার ঘুরে আরও দেখা গেছে, সরকারি নির্ধারণকৃত দামের থেকেও কেজি প্রতি ২৬ টাকা বাড়িয়ে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। বাজারে সব কিছুর লাগামহীন দামের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। তাদের অনেকেই বাজারের এই অবস্থার জন্য সরকারকে দুষছেন।

বাজার করতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কবির আহমেদ বলেন, কি বলব, আমাদের কিছুই বলার নেই। আমাদের মরা ছাড়া উপায় নেই। সরকার কি দাম বেঁধে দিল আর দিল না সে অপেক্ষায় কি ব্যবসায়ীরা থাকেন? দাম বাড়ালে এরা মুহূর্তেই দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেন, কিন্তু দাম কমালে এরা কমায় না। সরকার যেন কিছুই করতে পারছে না। কিছুতেই যেন সিন্ডিকেটের ভূত পিছু ছাড়ছে না। সবকিছুতেই শুনি সিন্ডিকেট।

সাজেদা বেগম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, এখন আর লিস্ট নিয়ে বাজারে আসি না। সারা মাসের কিছুই কিনে রাখি না। সবকিছুর যে দাম তাতে খাওয়া বন্ধ করতে পারলেই বাঁচতাম। সেটিও পারছি না। আমরা চাই সরকার একটি কার্যকর ভূমিকা পালন করুক। যেভাবে বিচ্ছিন্ন মনিটরিং এবং অভিযান পরিচালনা করেন এতে কিছুই হচ্ছে না। সিন্ডিকেটের হোতাদের ধরতে হবে। তাহলেই সাধারণ মানুষ খেয়ে বাঁচতে পারবে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা কোনো কিছুই কম দামে কিনতে পারছেন না। সব কিছুই আড়ত থেকে উচ্চমূল্য দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরা বিক্রি করতে গেলে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আড়ত থেকে দাম না কমালে ভোক্তাপর্যায়ে দাম কমানো সম্ভব না।

সরকার নির্ধারিত বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে ডিম বিক্রেতা হারিস উদ্দিন বলেন, আমরাই প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা ৫০ পয়সায় কিনে আনি। এসব ডিমের কয়েকটি ভেঙে বা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ১৫ টাকার নিচে বিক্রি করা সম্ভব হয় না। ১৫৫ টাকা ডিমের ডজন কিনে কিছু তো লাভ করতেই হবে। আমরা যদি কম দামে কিনতে পারতাম তাহলে কম দামে বিক্রি করতে পারতাম। আমাদের হাতে আসলে কিছুই নেই।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. আউয়াল বলেন, পাইকারি বাজারে ১০০ টাকা কেজিতে দেশি পেঁয়াজ কিনেছি। আমরা ১০ টাকা লাভে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। যারা আড়তদার তারাই কম দামে মাল দেয় না, আমরা কীভাবে দেব? তারাই সিন্ডিকেট করে রাখেন। মাল মজুত রেখে তারাই তো দাম বৃদ্ধি করেন। আজ সকালে শ্যামবাজার থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ৯০ টাকায় পেঁয়াজ কিনে এই মাল আনতে আরও ৩ থেকে ৪ টাকা খরচ হয়। তাহলে ১০০ টাকার কমে তো বিক্রির উপায় নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর