ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম ‘আরএমসি স্পোর্টস’ জানিয়েছে, বুধবার (৯ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকালে ক্লাবের পাঁচ খেলোয়াড়ের সঙ্গে বসেছিলেন পিএসজির ক্রীড়া পরিচালক লুইস কাম্পোস ও কোচ লুইস এনরিকে। এই পাঁচ খেলোয়াড় হলেন—নেইমার, মার্কো ভেরাত্তি, হুগো একিতেকে, রেনাতো সানচেস ও হুয়ান বের্নাত। তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পিএসজিতে তাঁদের আর প্রয়োজন নেই। নতুন ক্লাব খুঁজতে বলে দেওয়া হয়েছে এই পাঁচ খেলোয়াড়কে।
এর আগে মঙ্গলবার পিএসজির অনুশীলনেও ছিলেন না নেইমার ও ভেরাত্তি। নতুন মৌসুম শুরুর আগে খেলোয়াড়দের অফিশিয়াল ফটোসেশনেও রাখা হয়নি তাদের। ফটোসেশনে ছিলেননা কিলিয়ান এমবাপ্পেও। এই ফরাসি তারকারও পিএসজিতে থাকা অনিশ্চিত। নেইমার ও ভেরাত্তি নিজ নিজ অনুশীলন সেরেছেন ইনডোরে। গত সোমবার পায়ে হালকা চোট পেয়েছিলেন নেইমার।
আগামী শনিবার লোঁরিয়ার বিপক্ষে লিগ ‘আঁ’তে নতুন মৌসুমের প্রথম ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে পিএসজি। এ ম্যাচে নেইমার ও ভেরাত্তির না থাকার সম্ভাবনাই বেশি বলে জানিয়েছে আরএমসি স্পোর্টস। চলতি দলবদলের মৌসুমেই তাঁদের নতুন ক্লাব খুঁজে নিতে বলা হয়েছে। নেইমারের সঙ্গে পিএসজির বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালে। ব্রাজিল তারকাকে ঘিরে তিনটি ক্লাবের নামের গুঞ্জন ভাসছে।
বার্সেলোনা নেইমারকে কিনতে পারবে কি না এবং কত টাকা বেতন দিতে পারবে—এ সবকিছু বেশ জটিলতা রয়েছে। চেলসির ক্ষেত্রে শুধু নেইমারের উচ্চ অঙ্কের বেতন নিয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তৃতীয় ক্লাবটি হচ্ছে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। সৌদি প্রো লিগের এই ক্লাব নেইমারকে বড় অঙ্কের বেতনেই দলে ভেড়াতে চায়। আর ভেরাত্তির ক্ষেত্রে সৌদি প্রো লিগেই যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তবে একটা বড় কিন্তু আছে। স্পেনের সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভোর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পিএসজি একতরফাভাবে নেইমারকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সিদ্ধান্তটা হতে হবে দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে। কারণ, গত দলবদলের মৌসুমেই ব্রাজিল তারকা তাঁর চুক্তিপত্রের একটি শর্ত কার্যকর করেছিলেন। সেই সুবাদেই নেইমারের চুক্তির মেয়াদ আরও দুই বছর বেড়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত হয়েছে।
মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, ২৮ বছর কিংবা তার বেশি বয়সী কেউ চুক্তি করলে বা নবায়ন করলে ফিফার আইনের অধীন দুই বছরের জন্য সুরক্ষিত থাকবেন। মানে, খেলোয়াড় রাজি না থাকলে এই দুই বছরের মধ্যে ক্লাব চাইলেই তাঁকে বের করে দিতে পারবে না। ২৮ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে এই রক্ষাকবচ তিন বছরের জন্য হয়ে থাকে।
মুন্দো দেপোর্তিভোর দাবি, নেইমারকে তাই চাইলেই বের করে দিতে পারবে না পিএসজি। সেটি হতে হবে দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে। অবশ্য নেইমারের পিএসজি ছাড়ার ইচ্ছার খবর সত্যি হলে এই আইনের কথা সামনে আসবে না।
মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, পিএসজি যদি এরপরও চুক্তি বাতিল করে নেইমারকে বিদায় করতে চায়, তাহলে দুটি পরিণতি হতে পারে—নেইমারকে বাকি চার মৌসুমের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে (২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত)। আরেকটি পরিণত হলো, আগামী দুই মৌসুমের জন্য পিএসজি কোনো খেলোয়াড় কিনতে পারবে না। মুন্দো দেপোর্তিভো নিয়মটি উল্লেখও করেছে, ‘এই শাস্তির অধীন ক্লাব নতুন কোনো খেলোয়াড় নিবন্ধন করতে পারবে না, সেটি দুই মৌসুমের জন্য।’
তাই পিএসজি শুধু চাইলেই হবে না, নেইমারকেও রাজি করাতে হবে। তবে যদি নেইমার নিজে ক্লাব ছাড়তে চায় তাহলে ঠেকায় কে!