মোঃ শাখাওয়াত হোসেন মিন্টুঃ
১৯৫২ সালে বাঙ্গালীর মুখের ভাষা মাতৃভাষা বাংলার দাবীতে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনময়ে অর্জিত আমাদের এই মাতৃভাষা। ১৯৫২ সালের পর গত ৭০ বছরেও ফরিদগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২৯৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নেই কোন শহীদ মিনার। তাইতো ভাষা সৈনিকদের স্বরণে মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনার না থাকার কারণে কোথাও বাঁশ, কলাগাছ, কাঠ ও মাটি দিয়ে অস্হায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ করে পুষ্পস্তবক অর্পন করে পালিত হয় মাতৃভাষা দিবস।
উপজেলায় ২৯৬ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯০টি, নিস্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৬টি, উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রী কলেজ ৯টি, দাখিল মাদ্রাসা ২৪টি, আলিম ও ফাজিল মাদ্রাসা ২৬টি, এবং কামিল মাদ্রাসা ১টি। এর মধ্যে ১৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮টি মাদ্রাসা ও ৯টি কলেজ সহ সর্বমোট ৬৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বাকি ২৩১টি প্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠেন শহীদ মিনার।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ এ আর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজল বলেন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের ব্যাপারে জানতে আরো আগ্রহ প্রকাশ করবে। ভিবিন্ন প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দিবস সম্পর্কে তেমন গুরুত্ব দেয় না।
ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ কুন্তল কৃষ্ণ নাথ বলেন ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছরে এসে এখনো প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার না থাকা দুঃখের বিষয়। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মানের মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
জেলা পরিষদের সদস্য মশিউর রহমান মিঠু বলেন জেলা পরিষদ থেকে সকল প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, প্রায় ১৫ টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শহীদ মিনার নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সে সকল প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।চলতে বছরেরও বাকি মাধ্যমিক পর্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার শিউলি হরি বলেন উপজেলার শিক্ষা অফিসারদের সাথে আলাপ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায় তার চেষ্টা করবো।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম রোমান বলেন প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের প্রাথমিক পর্যায় থেকে শহীদ মিনার সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। এই প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।