বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন

ফরিদগঞ্জে প্রাইভেট ক্লিনিকের দালালদের উৎপাতে সরকারি হাসপাতালের রোগীরা অতিষ্ঠ

মেঘনার আলো ২৪ ডেস্ক / ১৫৬ বার পঠিত
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২, ৯:৪৫ অপরাহ্ণ

 

 

এ,এস লিটন, ফরিদগঞ্জ 

 

ফরিদগঞ্জ উপজেলা ৫০শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে দিন দিন দালালের উৎপাত বেড়েই চলছে। এসব দালালদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সেবা নিতে আসা সাধারন রোগীরা। উপজেলার ৫ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা কেন্দ্র সরকারী হাসপাতালটি পৌর এলাকায়। হাসপাতালটির আশেপাশে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠা নামসর্বস্ব পাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আবার ওইসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়োগকৃত দালালরা সরকারি হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশ করে প্রাইভেট ক্লিনিকের ভিজিটিং কার্ড বিতরণের অভিযোগও রয়েছে। ক্লিনিকের পোষা দালালদের প্ররোচনায় নিঃস্ব হচ্ছে রোগী ও স্বজনরা।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারী হাসপাতালের সামনে প্রভাবশালীদের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত ক্লিনিক মালিকদের পৃষ্ঠপোষকতার কারনে এদের বিরুদ্ধে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছেনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উপজেলার প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের সেবার জন্য প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালটি ৩১ শয্যা হলে ও পরবর্তীতে বর্তমান সরকার আরো একটি আধুনিক ভবন দেওয়ায় ৫০ শয্যায় উন্নতি করা হয়। বর্তমানে জরুরী বিভাগ ছাড়া ও গাইনী-প্রসূতি, শিশু মেডিসিন, সার্জারী, ডায়রিয়া ও রেডিওলজি, প্যাথলজি বিভাগসহ অস্ত্রোপচার কক্ষ রয়েছে হাসপাতালটিতে। অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা হাসপাতালটিতে অস্ত্রোপাচারের স্বনাম রয়েছে। এত কিছু থাকা পরও দালাল, ঔষধকোম্পানীর প্রতিনিধিদের উৎপাতে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। হাসপাতালকে ঘিরে ১ ডজনেরও বেশি দালাল সক্রিয়। এ দালাল চক্রের পাশাপাশি ফার্মেসীর মালিকরাও এ কাজে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কমিশন ভিত্তিক কাজ করা এ সব দালাল চক্রের হোতারা উন্নত চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে অসচেতন-নিরিহ রোগীদের বাগিয়ে ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তি ফি হতে শুরু করে রোগ নির্নয়ের জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা ফি থেকে কমিশন পান দালালরা। তবে এসব প্রাইভেট ক্লিলিনিকের একটি কমিশন কিছু লোভী ডাক্তাররাও পান বলে নিশ্চিত করেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা।
উপজেলার গাজীপুর এলাকা থেকে সেবা নিতে আসা প্রবাসী আবুল কালাম, পৌর এলাকার তসলিম আহমেদ ও ৭নং পাইকপাড়া থেকে সেবা নিতে আসা কেএম হাসান বলেন, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রয়োজন হলে ডাক্তাররাই রহস্য জনক কারনে প্রাইভেট ক্লিনিকে যাওয়ার জন্য ইঙ্গিত করেন। এ ছাড়া হাসপাতালের ভিতর থেকে প্রাইভেট ক্লিনিকের ভিজিটিং কার্ড বিতরণ করে বলা হচ্ছে ভালো চিকিৎসা পেতে হলে প্রাইভেট ক্লিনিকে যান। এতে আপনি ভালো চিকিৎসা পাবেন, সরকারি হাসপাতালে নামে চিকিৎসা ভালো কোনো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছেনা। এভাবেই রোগীদের সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা বেসাবি ত করছে দালাল চক্র।
উপজেলার ১৪ নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিন ইউনিয়নের পশ্চিম পোঁয়া গ্রাম থেকে হাসপাতালে সেবা নিতে রোগী জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী জানান, শুনেছি সরকারি হাসপাতাল উন্নত হয়েছে, তাই চিকিৎসা নিতে আসছি। কিন্তু হাসপাতালের সামনে আসলে একজন মহিলা প্রাইভেট ক্লিনিকে যাওয়ার জন্য বলেন। তার কথায় আমরা রাজি না হলে ওই মহিলা বলে ভালো কথা কইছি ভালো লাগেনা, সরকারি হাসপাতালে সেবার নামে কি হয় আমরা মনে হয় জানিনা। এ ভাবেই সরকারি হাসপাতালের রোগীদের সেবাবি ত করে ওই সব দালালরা।
এছাড়াও সরকারি হাসপাতালে সরকারের রুটিন অনুযায়ী কর্তব্য পালন না করে, কয়েকজন চিকিৎসক প্রাইভেট ক্লিনিকে ২শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত ভিজিট নিয়ে আন্তরিকতার সহিত রোগী দেখছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফ আহমেদ চৌধুরী জানান, দালালদের বিষয়টি ইতিমধ্যে আমাদের নজরে আসছে, আমরা প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোকে চিঠি দিয়েছি এসব বন্ধ করার জন্যে। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকারপর দালালরা আবার চক্রিয় হয়ে উঠেছে, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে দালালদের দৌরাত্ব নিরসনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসলিমুন নেছা জানান, সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা থেকে রোগীদের বি তকারী দালালদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর