বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫১ অপরাহ্ন

বঙ্গবন্ধু কোনো দল বা গোষ্ঠীর নন, তিনি বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা’

মেঘনার আলো ২৪ ডেস্ক / ১১১ বার পঠিত
আপডেট : সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২, ৭:০৫ অপরাহ্ণ

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আজ (সোমবার) আইসিটি টাওয়ারের অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। রাজধানীর আগারগাঁও-এ আইসিটি বিভাগের পক্ষে ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ : স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার উৎস’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক মো. খায়রুল আমীন-এর সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর পক্ষে পরিচালক (যুগ্মসচিব) এ এন এম সফিকুল ইসলাম ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করেন। দেশের প্রতি বর্তমান প্রজন্মের দায়বদ্ধতার কথা তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান ০৭ মার্চের ভাষণের নান্দনিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ৭৪ শতাংশ তরুনের কাছে বঙ্গবন্ধু মানেই ৭ মার্চের ভাষণ। এই ভাষণের মাধ্যমে তিনি একটি জাতিকে শুধু চলার পথের দিশাই দেননি, পাশাপাশি তাঁর সারা জীবনের রাজনৈতিক সংগ্রামের দুঃখ, বঞ্চনা এবং ভবিষ্যতের রূপরেখাও তুলে ধরেছেন এক অবাক করা কাব্যিক মাধুর্য্যতায়। এ ভাষণেই তাঁর সুগভীর দার্শনিক চিন্তা ও গণমুখী নেতৃত্বের সর্বোচ্চ নান্দনিক প্রকাশ ঘটেছিলো। তাঁর এই সুকৌশল বার্তা বাংলার জনগন যথার্থই অনুধাবন করেছিলো, তাই তখন থেকেই তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে তিনি যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রদান করেন। বৈশ্বিক স্বীকৃতি এবং সহানুভুতি তৈরির ক্ষেত্রেও এই ভাষণ নিয়ামকের ভুমিকা পালন করেছে। স্বতঃস্ফুর্ত অথচ সুগঠিত এ ভাষণটি ছিলো একই সঙ্গে আবেগ ও যুক্তিতে পূর্ণ। তিনি বলেন এই ভাষণের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার রূপরেখা অঙ্কন করেন; এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির রোডম্যাপ প্রস্তুত করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ২৩ বছরের শোষণ ও বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরেন। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ আজ পাকিস্তানের চেয়ে সব দিক থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুণর্গঠনে যখন বঙ্গবন্ধু হাত দিয়েছিলেন তখন থেকেই তার বিরুদ্ধে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। এসব ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করেই তিনি দেশকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে অত্যন্ত সুকৌশলে আড়াল করে রাখা হয়। যে জয় বাংলা স্লোগানে মুক্তিযু্দ্ধের দিনগুলোতে বাংলার আকাশ-বাতাস মুখরিত ছিলো, অত্যন্ত সুকৌশলে সেই স্লোগানকে আড়াল করে রাখা হয়েছে। যে বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না সেই নেতাকে একটি প্রজন্মের কাছে একেবারে আড়াল করে রাখে একটি গোষ্ঠী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনো নির্দিষ্ট দল, গোষ্ঠী বা দেশের নন, তিনি বিশ্বের একজন অবিসংবাদিত নেতা। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা অনুযায়ী জনগণের সাথে মিশে গিয়ে জনগণের খাদেম হয়ে সেবা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু  রাজনৈতিক মুক্তি দিয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম সফল করেছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।

আলোচনা সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক মো. খায়রুল আমীন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এর আগে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বিভাগের দপ্তর ও সংস্থা সমূহের কর্মকর্তাদের নিয়ে আইসিটি টাওয়ারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য উন্মোচন করেন এবং তাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর