মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন

ডা. দিপু মনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ‍্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

মেঘনার আলো ২৪ ডেস্ক / ১৭৩ বার পঠিত
আপডেট : বুধবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১:৩৬ অপরাহ্ণ

 

গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. দিপু মনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। আজ ২৬ জানুয়ারি বুধবার চাঁদপুর প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস এর সঞ্চালনায় এবং  সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ইউসুফ গাজী..

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয়ের
জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে
 স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ত‍্যাগ ও সংগ্রামের লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে একজন সৎ ও সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশে
বিদেশে পরিচিত ডা: দীপু মনিকে কী উদ্দেশে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে  দুর্নীতির মিথ্যা  অভিযোগে অভিযুক্ত
করে তার মত একজন রাজনীতিবিদের সুনামও সম্মান নষ্ট করার জন্য  অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে তা উদঘাটিত হওয়া
প্রয়োজন।
বিগত ১৩ বছরে ডা: দীপু মনি এম পি’র নির্বাচনী এলাকায় বহু সরকারি  ̄’স্থাপনা নির্মিত হয়েছে এবং এসকল  ̄’স্থাপনার
জন্য  ̈ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। চাঁদপুরে কোন অধিগ্রহণকৃত জমিতে কোথাও কখনো ডা: দীপু মনি বা তার
পরিবারের কোন জমি কখনো ছিলো না। তার উদ্যোগে চাঁদপুর হাইমচরে  ̄’স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়। সেখানে জমির
মূল্য ̈ শতাংশ প্রতি ৫ হাজার টাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকায় উন্নীত হয়। সরকারের নিকট হতে ক্ষতিপূরণ লাভের
আশায় বা অন্য  ̈ কোন উদ্দেশে ̈ সেখানেও ডা: দীপু মনি বা তার পরিবার কখনো কোন জমি ক্রয় করেননি।
গত ১৩ বছরে কোন নিয়োগে, কোন টি আর, কাবিখা বিতরণে, কোন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বা অন্য ̈ কোন
কার্যক্রমে  ডা: দীপু মনি বা তার পরিবারের কোন ধরণের আর্থিক অস্বচ্ছতা বা অনিয়ম কোন দিন ছিল না; এ বিষয়ে
জেলার সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তাসহ জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় নেতবৃন্দ ও সাধারণ
জনগণ সবাই অবগত আছেন। কী উদ্দেশে ̈ হঠাৎ করেই আজ ডা: দীপু মনিকে অসৎ প্রতিপ্রন্ন করবার, হেয় করবার
অপচেষ্টা করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
যে বা যারা কোন কোন গনমাধ‍্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  ডা: দীপু মনি বা তাঁর পরিবারকে জড়িয়ে জঘন্য
মিথ্যাচার  করছে তাদের আসল উদ্দেশ্যে ̈ উদঘাটিত হওয়া অতীব জরুরী।
এটি শুধু ডা: দীপু মনির সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা নয়, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন ও রাজনীতিকে মুখোমুখি
দাঁড় করিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার কিংবা শেখ হাসিনা সরকারকে অপদস্ত  ̄’করার ঘৃণ ̈ অপচেষ্টা বলেও অনেকেই
আশংকা করছেন।
এক্ষেত্রে যে বিষয় গুলো ̧লক্ষনীয়ঃ
১। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য  নির্ধারিত জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে জমির মূল্য  নির্ধারণ জমির
মালিকের করার সুযোগ নেই। জেলা প্রশাসনই উভয় প্রাক্কলন তৈরী করেছে।
২।  স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন, ২০১৭ এর ৯(১) ধারা অনুযায়ী প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হয়।
৩। উক্ত আইন অনুযায়ী ৪ ধারার নোটিশ জারির পূর্ববতী ১২ মাসে সম্পাদতি সকল দলিল বিবেচনায় নিয়ে গড় মূল্য
নির্ধারণ করতে হবে।
৪। আইনের বিধান অনুযায়ী প্রথম প্রাক্কলন দাঁড়ায় ৫৫৩ কোটি টাকা।
৫। পরবর্তীতে ৪ ধারার নোটিশ জারির পূর্ববতী ১২ মাসের সম্পাদিত সকল দলিলের গড় মূল‍্যের পরিবর্তে ১৮২ টি
দলিলের মধ্যে ১৩৯ টি দলিল বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ৪৩টি দলিলের (সর্বনিন্ম মূল‍্যের) গড় মূল্যকে বিবেচনায় নিয়ে
দ্বিতীয় প্রাক্কলনটি প্রস্তুত করা হয়, যার মূল্য  দাঁড়ায় ১৯৩ কোটি টাকা।
৬। আইনে ৪ ধারার নোটিশ জারির পূর্ববর্তী ১২ মাসের গড় মূল‍্যের ভিত্তিতে বাজার মূল্য  ̈ নির্ধারণের বিধান থাকা
সত্ত্বেও  ৪ ধারার নোটিশ জারির পূর্ববর্তী ৩ বছরের গড় মূল্য̈কে বিবেচনায় নেয়া হয়, যা আইনসিদ্ধ নয়।
৭। জেলা প্রশাসন কতৃক দুটি প্রাক্কলনই প্রস্তুত  করা হয়। জেলা প্রশাসন কতৃক প্রথম প্রাক্কলনকৃত মূল্য  ৫৫৩ কোটি
টাকা যা জমির মূল্য  বাড়িয়ে দেয়ার কারণে ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন কতৃক দ্বিতীয় প্রাক্কলনকৃত
মূল্য ̈ ১৯৩ কোটি টাকা যা বাজার মূল্য বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। একইসাথে বলা হচ্ছে পূর্ববর্তী প্রাক্কলনে বাজারমূল‍্যের
২০ গুন বেশী দাম ধরা হয়েছিল । ১৯৩ কোটি টাকার ২০  ̧গুন গণিতের কোন নিয়মে ৫৫৩ কোটি টাকা হয় তাও
বোধগম ̈ নয়; এবং ঠিক কি কারণে একই কতৃপক্ষ একই জমির জন্য ̈ কিছুদিনের ব‍্যবধানে কেন দুটি প্রাক্কলন প্রণয়ন
করলো এবং যার মধ্যে  ̈ মূল্য ̈ এত পার্থক ̈ হলো তাও জানা প্রয়োজন।
৮। ডাঃ দীপু মনি’র চাঁদপুর জেলার কোথাও ক্রয়সূত্রে কোন জমির মালিকানা নেই। অর্থাৎ তিনি কখনোই চাঁদপুরে
কোন জমি ক্রয় করেননি। ডা: দীপু মনি এম. পি. এর পরিবারের কোন সদস‍্যের কোন জমি উক্ত  অধিগ্রহণ এলাকায়
নেই। কাজেই জমির মূল্য থেকে তাদের লাভবান হবার বা অনৈতিক কোন সুবিধা গ্রহণেরও কোন প্রশ্ন উঠতে পারে
না।
৯। ডাঃ দীপু মনি এম. পি. এর বড় ভাই বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ শল‍্য̈ চিকিৎসক ডাঃ জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ লক্ষীপুর
ইউনিয়নে নদীর পাড়ে হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রম  ̄’স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া  শুরুর বহু পূর্ব হতেই অল্প
অল্প করে জমি ক্রয় করছিলেন। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য  ̈ প্রাথমিকভাবে চিন্তা করা ২টি  ̄স্থানের
মধ্যে ̈ লক্ষীপুর ইউনিয়নের  ̄’স্থানটি চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া  শুরু হওয়ার পরে ডাঃ জাওয়াদুর রহিম
ওয়াদুদ রেজিস্টার্ডদলিলমূলে ক্রয়কৃত সকল জমি হস্তান্তর করে দেন। কারণ তার ছোটবোন শিক্ষামন্ত্রী এবং তার
ক্রয়কৃত জমি অধিগ্রহণ করা হলে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন যা Conflict of interest হিসেবে বিবেচিত
হতে পারে।
১০। বাংলাদেশে যেকোন জায়গায় কোন উল্লেখ ̈যোগ‍্য স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণের পূর্বেই বহু মানুষ উক্ত স্থানে বা তার আশেপাশে জমি কিনে থাকেন বা কোন  ̄স্থাপনা নির্মাণ করেন। তা কখনো আর্থিকভাবে লাভবান হবার
জন্য ̈, কখনো বড় বা ভালো কোন  ̄’স্থাপনার কাছে থাকবার জন্য  ̈। চাঁদপুরের কেউ একইভাবে লক্ষীপুরে জমি কিনে
থাকতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের  জন্য  অধিগ্রহণের নিমিত্ত নির্ধারিত জায়গায় কে বা কারা জমি ক্রয় করেছেন বা
করছেন তা ডা: দীপু মনি-র জানবার কথা না। তিনি জানেনও না।
১১। শুধুমাত্র তাঁর বড় ভাইয়ের হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রম ’স্থাপনের জন্য ক্রয়কৃত এবং অধিগ্রহণের পূর্বেই হস্তান্তরকৃত (দলিল নং৮০৪০, ৬/১২/২০২১) জমির বিষয়ে তিনি অবহিত ছিলেন।
১২। উল্লেখ ̈ যে, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের  জন্য  দ্বিতীয় দফায় আরও ২২ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব  সম্বলিত নথি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে উপস্থাপিত  হলে, তিনি সে প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তিনি নথিতে লিখে দেন যে চাঁদপুর নদীভাঙ্গন
কবলিত এলাকা হওয়ায় সেখানে জমি অপ্রতুল। এছাড়া একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনের জন্য ৬২ একর
জমি, যা ইতোমধে ̈ অধিগ্রহণের জন্য ̈ অনুমোদন করা হয়েছে, তাই যথেষ্ট।
১৩। এছাড়াও অভিযোগ করা হচ্ছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ’স্থাপনের নিমিত্তে অধিগ্রহণের জন্য ̈ নির্ধারিত  ̄’স্থানটি অনুপযুক্ত
এবং ভাঙ্গনের ঝুঁকি রয়েছে। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নির্ধারণের জন্য ̈ যে বিষয় ̧গুলোর উপর
 ̧গুরুত্ব দেয়া হয় তা হলো বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে বেশি দূরে না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির সাথে
আশেপাশের জেলা গুলোর যোগাযোগ ব‍্যবস্থা যেন ভালো থাকে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের  যেন কোন হাইওয়ে সড়কের
পাশে না হয়, তার অন‍্যতম কারণ প্রায়শ দেখা যায় কোন ছাত্র অসন্তোষ দেখা দিলে ছাত্ররা হাইওয়ে অবরোধ করে
দেন ও যোগাযোগ ব‍্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটায়। এ সকল দিক বিবেচনা করে লক্ষীপুরের জায়গাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাব  করা হয়। কারণ লক্ষীপুর ইউনিয়ন শহর থেকে মাত্র ০৩ কি:মি: দূরে এবং লক্ষীপুর ইউনিয়নের সাথে শরিয়তপুর,
মাদারীপুর, লক্ষীপুর জেলার যোগাযোগ ব‍্যবস্থা ভালো। নির্ধারিত  ̄’স্থানটি  ̄’স্থায়ী বাঁধ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ী
বাঁধের ভিতরে অবস্থিত।  ̄স্থায়ী বাধঁ নির্মাণের পর গত দশ বছরের অধিককালে সেখানে কোন ধরণের ভাঙ্গনের কোন
ঘটনা ঘটেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিবেদনেও এখানে বিশ্ববিদ্যালয় করা যায় মর্মে মত দেয়া হয়েছে।
১৪। ডা: দীপু মনি ও তাঁর বড় ভাইয়ের কেউ কখনো কোন আর্থিক অনিয়ম বা দুর্নীতির সাথে কোনদিন জড়িত ছিলেন
না বা নেই। তার নির্বাচনী এলাকায় গত ১৩ বছরে এম পি হিসেবে তার সততা ও  ̄স্বচ্ছতা সর্বজন বিদিত।
১৫। অধিগধহণের জন্য  ̈ নির্ধারিত জমির মূল্য  ইচ্ছাকৃত ভাবে বৃদ্ধি করার জন্যে ̈ বেশী মূল্যে  জমি হস্তান্তরের ঘটনা যদি
ঘটে থাকে তবে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব‍্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব‍্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে ডা: দীপু মনি মনে
করেন।
১৬। জমির যথাযথ মূল্য  না পাওয়ার আশংকায় জমির মালিকদের মধ্যে থেকে ৩ জন হাইকোর্টে ২ টি রিট মামলা
দায়ের করেন যা বর্তমানে আদালতের বিবেচনাধীন রয়েছে।
১৭। উল্লেখ যে, আলোচ‍্য বিষয়টি পদ্মা সেতুর কথিত দুর্নীতির অভিযোগের মতোএকটি অভিযোগ। যেখানে অর্থবরাদ্দ
বা লেনদেন হয়নি, ক্রয়-বিক্রয় হয়নি সেখানে দুর্নীতি হয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগ সহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীগন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর