শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন

চাঁদপুরে প্রধান শিক্ষকের রহস্যজনক মৃত্যু

মেঘনার আলো ২৪ ডেস্ক / ১৯৪ বার পঠিত
আপডেট : বুধবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২২, ৯:৩৪ অপরাহ্ণ

চাঁদপুর শহরের মরহুম আব্দুল করিম পাটোয়ারী সড়কস্থ বিষ্ণুদী আজিমিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম এর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পিবিআই সহ পুলিশের একাদিক টীম কাজ করছে।
ঘটাস্থলে গিয়ে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম(৫৩) প্রতিদিনের ন্যায় ২৬ জানুয়ারি সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থল আজিমিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়।  এরপর দুপুর ফুরিয়ে গেলে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বহুবার ফোন করা হলেও অপরপ্রান্ত থেকে কোনো সাড়া পাওয়া না যাওয়ায় চারদিকে তল্লাশি শুরু করে। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা ৩টার পর তার কর্মস্থল বিদ্যালয়ে গেলে তাকে বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত তাকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য  বিকেল ৪টায়  ঢাকা রেফার করেন। ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে তাকে আবার ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।  পরে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁদপুর সদর হাসপাতালের ইমাজেন্সী মেডিকেল অফিসার ডা. সাগর মজুমদার বলেন, রুগীটিকে শেষ সময়ে আমাদের কাছে নিয়ে আসে। পরবর্তীকালে আমরা তাকে ঢাকায় রেফার করি।পরবর্তীতে জানতে পারি পথে মারা যান। তবে বিষক্রিয়া নাকি অন‍্যকারনে মারা গেছে তা এখনি বলতে পারছি না বলে তিনি আরো জানান।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, গত ১ জানুয়ারি সর্বশেষ ফোনে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে । আমার জানামতে রফিকুল ইসলাম ভালো একজন মানুষ ছিলেন। কিভাবে কি হলো তা বুঝতে পারছিনা।
উক্ত বিদ‍্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অর্পনা রানী বিশ্বাস বলে, স‍্যারসহ গত ২২ জানুয়ারি ছুটির বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দেই। গতকাল সকাল ১০ টায় ফোন দেই স্কুলে যাওয়ার জন্য। পরে তিনি  পরের দিন স্কুলে যাওয়ার কথা বলেন।
মৃত মো. রফিকুল ইসলামকে ফুফা দাবী করা মুনির শাহরিয়ার বলেন, ফুফা আমাকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন। সকাল থেকে ফুফার মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় ফুফির কথায় স্কুলে যাই।  গিয়ে দেখি ফুফা স্কুলের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে জানালার পাশে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। সেখানে কয়েকটি বিষের বোতল ও গামছা দেখতে পাই। তখনই আমরা ফুফাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আসিফ মহিউদ্দিন বলেন,  আমরা প্রাথমিক ভাবে একটি সুইসাইড নোটের মতো কিছু একটা পেয়েছি। আর শরীরে তেমন কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তার মূখে বিষের একটা আলামত পাওয়া গেছে। বাকীটা ময়না তদন্ত শেষে বিস্তারিত যানা যাবে বলে  সাংবাদিকদের তিনি আরো জানান।
চাঁদপুর মডেল থানার ওসি তদন্ত সুজন বড়ুয়া বলেন, প্রথমে তাকে বিষ খাওয়া অবস্থায় পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে সব পরিস্কার হওয়া যাবে।
মরহুম মো. রফিকুল ইসলামের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক বাজারের শ্রী কালীয়া গ্রামে। তার স্ত্রী এবং দুটি মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং  ছোট মেয়ে শহরের মাতৃপীঠ বালিকা উচ্চ বিদ‍্যালয়ের নবম শ্রেণিতে অধ‍্যায়নরত রয়েছে।
তার কয়েকজন সহকর্মী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, স‍্যার খুবই ভালো একজন লোক ছিলেন। আত্মহত্যার মতো কাজ তিনি করতে পারেননা। আমাদের স‍্যারের মৃত্যু রহস‍্যজনক মনে হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর