মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠ চরমুক্তারপুর এলাকায় চার তলা ভবনের দুই তলার ফ্ল্যাটে গ্যাস লিকেজে বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুনে দগ্ধ দুই ভাই-বোন ইয়াছিন (৫) ও নোহর (৩) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। একই দুর্ঘটনায় দগ্ধ দুই শিশুর মা-বাবা শান্তা ও কাওছারের শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাদের বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু ইয়াছিন ও রাত সোয়া ৯টার দিকে তার বোন নোহরের মৃত্যু হয়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন জানান, শিশু ইয়াছিনের শরীরের ৪৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তার বোন নোহরের শরীরের ৩২ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
ডা. আইউব আরও জানান, দুই শিশুর মা-বাবা শান্তা ও কাউছারকে বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কাওছারের শরীরের ৫৪ শতাংশ ও শান্তার শরীরের ৪৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের দু’জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) রাজিব খান জানান, আগুনে দগ্ধ একই পরিবারের দুই শিশু মারা গেছে। ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। আর শিশুদের মা-বাবার আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এর আগে, বৃহস্পতিবার ভোরে চরমুক্তারপুর এলাকায় জয়নালের চার তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় হঠাৎ বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসময় ঘরের জানালার থাই গ্লাস পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে যায়। এসময় শান্তা-কাওছার দম্পতি তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমে ছিলেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিস্ফোরণে আগুনে দগ্ধ হন তারা। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
মুন্সীগঞ্জ তিতাস গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপক মেসবাহ উদ্দিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে— গ্যাসের চুলা থেকে লিকেজ হয়ে গ্যাস বের হয়ে ঘরে জমেছিল। সেখান থেকে বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে।