মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন

হাজীগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির পরিদর্শণ করলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ । জঙ্গিবাদের তকমা আর মৌলবাদের উত্থানের কথা বলে দীর্ঘ সময় সরকারে থাকতে চায় আ’লীগ — বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

মেঘনার আলো ২৪ ডেস্ক / ৪৪৫ বার পঠিত
আপডেট : শনিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৪০ অপরাহ্ণ
হাজীগঞ্জে পবিত্র কোরআন অবমাননাকে কেন্দ্র করে ক্ষতিগ্রস্ত পূজামন্ডপ পরিদর্শন শেষে সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। পাশে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্, হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

গত ১৩ অক্টোবরের ঘটনায় হাজীগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির পরিদর্শন করেছেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। শনিবার বিকালে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন শ্রী শ্রী রাজা ল²ী নারায়ন জিউর আড়খা ও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম পরিদর্শন করেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী।
পরিদর্শন শেষে সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কুমিল্লা নানুয়ার দিঘীর পাড়ে পূজামন্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননা এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যা ঘটেছে, তা দু:খজনক ও মর্মান্তিক এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য অপমানজনক ও অসম্মানজনক। যে ঘটনাটি ঘটেছে, এই ঘটনা নিয়ে বিশ্বাস যোগ্যতার অভাব আছে এবং সাধারণ লোকজন ও রাজনৈতিক সচেতন, সুশিল সমাজ কেউই এটি বিশ্বাস করতে পারছেনা।
তিনি বলেন, কোন স্পর্শকাতর বিষয় দেখা দিলে প্রশাসন প্রথম সেটা চাপা দেয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। অথচ ওসি নিজেই ঢোল পিটিয়ে দিলো পবিত্র কোরআন অবমাননা করা হয়েছে। আমি কোরআন শরীফ মন্দিরে পাইছি। এটার মধ্যে দিয়ে সারা দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মধ্যে একধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যারা বুঝেন তারা চুপ করেন, আর কিছু অবুঝ লোক-তো থাকে সমাজে। তারা সংগঠিত হয়ে এই ঘটনা দু:খজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, আমি ঢাকা থেকে রওনা দিলে প্রশাসন খবর পায় আমি হাজীগঞ্জে আসছি। আর প্রশাসনের নাকের ডগায় বার বার মিছিল করে এই হামলাগুলো হয়েছে, প্রশাসন চোখে দেখতে পারলোনা কেন? তাদের যে গোয়েন্দা সোর্স আছে এবং এই ছোট্ট জায়গা, এখান থেকে থানায় পায়ে হাঁটার পথ ১০ মিনিট। প্রশাসন নিশ্চুপ থাকলো কিসের ইঙ্গিতে।
সুতরাং আমি মনে করি, বাংলাদেশ একটা অসাম্প্রদায়িক দেশ এবং এই যে জঙ্গিবাদের তকমা আর মৌলবাদের উত্থানের কথা বলে সরকার ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার মধ্য দিয়ে আরো দীর্ঘ সময় তারা (আওয়ামী লীগ) সরকারে থাকতে চায়। তাদের ভোটের কোন বালাই নেই। জনগণের উপর তাদের কোন দায়িত্বও নেই।
বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, হাজীগঞ্জ থানাসহ দেশের যে কয়টা স্থানে মামলা হয়েছে। সেকল মামলায় জ্ঞাতের মধ্যেই সিংহভাগ বিএনপির নেতা-কর্মীর নাম। বিএনপির যে সকল নেতাকর্মীরা মন্দির ও মানুষদের রক্ষা করছে, তাদেরকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। সরকার প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের না করে এবং তাদের আড়াল করার জন্য রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলোকে দূর্বল করার জন্য চেষ্টা করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আমরা সরকারকে বলছি, সরকার দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছে এবং ঘটনার পর সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। আমরা সরকারে নাই এবং পুলিশের ভয়ে পালিয়ে থাকি। আমাদের নেতাকর্মীরা যদি বাহির হতে পারতো। এই ভয়টা যদি না থাকতো। তাহলে সারা দেশের মন্দির রক্ষা করার জন্য আমাদের নেতাকর্মীরাই যথেষ্ট ছিল।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি কর্মসূচী দেওয়ার আগেই সরকার গ্রেফতার শুরু করছে। আমাদের পার্টির মহাসচিবসহ আমরা প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও বিভিণœ রাজনৈতিক দলেরকে নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণকে আহবান করেছি, ঐক্যবদ্ধভাবে এই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরাও দল থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করবো।
এ সময় তিনি আরো বলেন আমরা ইচ্ছে থাকা সত্তে¡ও নিহতের বাড়িতে যেতে পারি নাই। আমরা যাবো কিন্তু প্রশ্ন আছে। কারণ আমরা গেলেও দোষ, না গেলেও দোষ। এখন পুলিশ বলবে, যারা হামলা করছে তাদের মারছি। তাদের বাড়িতে বিএনপি গেছে। এখানে বিএনপির ইন্ধন আছে। এখানে বিএনপির অর্থ যোগান আছে।
পরিদর্শণকালে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পূর্ণবাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজী ইয়াছিন রশীদ, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমেলন্দ্র দাস অপু, সদস্য দেবাশীষ রায় মধু, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জি. মো. মমিনুল হক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তফা খান সফরি ছিলেন।
এ সময় হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম.এ রহিম পাটওয়ারী, পৌর বিএনপির সভাপতি নাজমুল আলম চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল খায়ের মজুমদার, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম.এ নাফের শাহ, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির সুমন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব বিল্লাল হোসেনসহ উপজেলা ও পৌর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর