শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২০ অপরাহ্ন

করোনাকালে টাঙ্গাইলে ৫ হাজার ছাত্রীর বাল্যবিয়ে

মেঘনার আলো ২৪ ডেস্ক / ২০১ বার পঠিত
আপডেট : বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০২১, ১০:৪২ অপরাহ্ণ

করোনাভাইরাসের কারণে দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে দুই-একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া টাঙ্গাইলের প্রায় প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। দারিদ্র্যতা, পারিবারিক ও সামাজিক অসচেতনার কারণে এসব বাল্যবিয়ে হয়েছে বলে জানিয়েছে অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিরা।

করোনাকালে জেলায় অন্তত পাঁচ হাজার ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হলেও শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী টাঙ্গাইলে এক হাজার ২৪২ জন বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই বিয়ের পরও নিয়মিত ক্লাস করছে।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, জেলায় ৭৯৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা এবং কলেজ রয়েছে। জেলার ১২টি উপজেলায় করোনাকালে ১ হাজার ২৪২ জন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৮৮ জন, সখিপুরে ১৪৩ জন, ঘাটাইলে ৪৯ জন, গোপালপুরে ৫৬ জন, ভূঞাপুরে ১৪ জন, কালিহাতীতে ২২৯ জন, দেলদুয়ারে ২২৮ জন, বাসাইলে ৪৪ জন, নাগরপুরে ১১৪ জন, মির্জাপুরে ৬ জন, মধুপুরে ১১৮ জন, ধনবাড়ীতে ১৫৩ জন।

শিক্ষা অফিস তথ্য অনুযায়ী সদর উপজেলায় ৮৮ জন দেখালেও এ উপজেলার চরাঞ্চলের হুগড়া হাবিব কাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬০ জন ছাত্রী, মগড়া উচ্চ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩০ জন, পাকুল্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২২ জন, চৌধুরী মালঞ্চ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৫ জন, খাস কাকুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩ জন ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে।

এছাড়াও টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় আরও অর্ধশত স্কুল রয়েছে। অপরদিকে ভূঞাপুর উপজেলায় বাল্যবিয়ের শিকার ১৪ জন দেখালেও চরাঞ্চল গাবসারা ইউনিয়নের রায়ের বাসালিয়ার কুলসুম জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৮ জন, চরগাবসারা দাখিল মাদ্রাসার ৩০ জন, টেপিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৫ জন, গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শ্রেণিতে ২৫ জন ও রুহুলী উচ্চ বিদ্যালয়ে অন্তত ৪০ জন ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে।

উপজেলার অন্যসব স্কুলের চিত্রও একই রকম। জেলার অন্যসব উপজেলার প্রতিটি স্কুলের চিত্র এ দুটি উপজেলার মতো হবে। তাতে জেলায় কয়েক হাজার ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম বলেন, বাল্যবিয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনা হবে। এছাড়াও তাদের গরমিল হিসাবের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ তিনি বলতে পারেননি।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাই ব্যস্ত ছিলেন। এ সুযোগে চরাঞ্চলের অসচেতন অভিভাবকরা স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের বিয়ে দিয়েছে, যা দুঃখজনক। তবে ওই সব শিক্ষার্থী যাতে আবার ক্লাসে আসতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হবে। বাল্যবিয়ের কুফলসহ প্রতিরোধে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জনসচেতনতামূলক সভা করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর